নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে তরুণদের ভাবনা

২৪ই জুলাই, ২০২৩, সকাল ১০টা – দুপুর ১২টা । মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রাথমিকভাবে আমদানি-নির্ভর এবং অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় দেশীয় গ্যাস এবং আমদানিকৃত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) দ্বারা। এলএনজি আমদানির উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীলতার পাশাপশি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ক্ষমতার অতিরিক্ত সম্প্রসারণ দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আর্থিক স্থায়িত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্য অনুসারে, সামগ্রিক বিদ্যুৎ ক্ষমতা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪.৪৫% বা ১০০০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড এর বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৩২.৩৩ বিলিয়ন টাকা ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বিপিডিবি।

বাংলাদেশ প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কয়লা চালিত বিদ্যুৎ এর ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করতে, বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালে ১০টি কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প বাতিল করেছে। গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি সামঞ্জস্য করতে, বাংলাদেশ আরও বেশি এলএনজি আমদানির উপর নির্ভর করার পরিকল্পনা করেছে। ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে ধারনা করা হচ্ছে যে আমদানিকৃত কয়লা, তেল এবং এলএনজির উপর শুল্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে এবং ফলস্বরূপ, অর্থনীতির উপর চাপ বৃদ্ধি পাবে। অধিকন্তু, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রাথমিক জ্বালানির উচ্চমূল্য প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০% এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০% পরিচ্ছন্ন জ্বালানি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। লক্ষ্যটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আর্থিক নীতি-নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পূর্বে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ খাত এবং জ্বালানি খাতের জন্য দু’টি ভিন্ন মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় তবে পরিকল্পনার ক্রুটি ও সমন্বয়ের অভাব দুটি খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান (IEPMP) তৈরি করছে, যা “জ্বালানি নিরাপত্তা”, “অর্থনৈতিক দক্ষতা”, এবং “পরিবেশ” বা “3E+S” ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং নিরাপত্তার উপর গুরত্ব আরোপ করে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বর্তমান IEPMP -এর পথ এবং জাতীয় বাজেটে এর প্রভাব বিশ্লেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

এলএনজি আমদানির ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীলতার ব্যয় এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা কাজ পরিচালনা করছে সানেম। একই সাথে, নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার কীভাবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারে তা নিয়েও কাজ করছে সানেম। সবুজ ও পরিচ্ছন্ন শক্তির দিকে বাংলাদেশকে পরিচালনার জন্য একটি টেকসই পথ খুঁজে বের করাই হল এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য। এলএনজি আমদানি মূল্য বেশ অস্থিতিশীল এবং কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী এলএনজি আমদানির দামের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। এক্ষেত্রে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গ্যাস চাহিদা ও সরবরাহ; এলএনজি আমদানির অর্থনৈতিক ব্যয় এবং বিদ্যুৎ খাতে এলএনজি ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত পরিবেশগত ঝুঁকি অনুমান এবং নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে নবায়নযোগ্য শক্তি এবং বিকল্প জ্বালানি উৎস নিয়ে তরুণ প্রজন্মের ভাবনা ও মতামত আলোকপাত করতে যাচ্ছে সানেম এবং ইএসসি।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে এবং আপনার মতামত ও প্রশ্ন জানাতে গুগল ফর্মটি পূরণ করুনঃ
https://forms.gle/58koPiWcQgpkwown8

নিবন্ধনকারীদের ইমেইলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের বিস্তারিত জানানো হবে।